
৩০ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৫৩
যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সেই দলের নেতা বনে যান তিনি। ৫ আগস্টের আগে ছিলেন যুবলীগ নেতা। এরপরে বিএনপি'র ছত্রছায়ায় একটি হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তবে তাতে ব্যর্থ হয়ে নামেন নতুন মিশনে। সুইডেন এবং স্পেনের দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা এলাকায় শিল্পাঞ্চল তৈরি করছে বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। সেই শিল্পাঞ্চল নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ও জনবল নিয়োগসহ সকল কাজ সম্পন্ন করার জন্য এইচআর (হিউম্যান রিসোর্স) বিভাগের প্রধান হিসেবে তাকে নিয়োগ করেছে সরকার। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত এমন একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের চিঠি ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। এলাকায় শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা এবং এর দেখভালের সার্বিক দায়িত্ব পাওয়ায় তিনি নেটিজেনদের শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসতে থাকেন। তবে এতেই ঘটে যায় মূল বিপত্তি। একপর্যায়ে সেই পোস্ট ভাইরাল হয়ে পৌঁছে যায় পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। এভাবেই ফাঁস হয়ে যায় তার কল্পকাহিনী নির্ভর ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ পাতা গল্পটা। এরপরে পাট অধিদপ্তরের ডিজি'র নির্দেশে মামলা দায়ের করা হলে গ্রেপ্তার হন স্বঘোষিত সেই এইচআর ডিপার্টমেন্টের প্রধান মিজানুর রহমান। গতকাল রাতে তাকে ডিবি এবং এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামের জহুর সরদারের ছেলে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র এবং অনুসন্ধানে জানা যায়, একসময়ে বরিশালের সুরভী লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন মিজানুর রহমান। সেখানে সাংবাদিক পেটানোসহ নানান অভিযোগ আলোচিত-সমালোচিত হওয়ার পরে চাকরিচ্যুত হন তিনি। এরপরে গ্রামের বাড়ি মাধবপাশায় এসে তিনি বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করে নিজেকে একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিতি লাভে মনোযোগী হন। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজেও হয়ে যান স্বঘোষিত এক যুবলীগ নেতা। তবে দলীয় কোনো পদ-পদবি ছিল না তার। এদিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই পালিয়ে যান মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রণব কুমার বেপারী। প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে চলতি দায়িত্ব গ্রহণের পরে ম্যানেজিং কমিটি (এডহক) গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেখানে সভাপতি প্রার্থী হন স্থানীয় এই আলোচিত মিজানুর রহমান। বিএনপি'র স্থানীয় কতিপয় নেতাদের শেল্টার নিয়ে তিনি রাতারাতি হয়ে যান বিএনপি নেতা। সভাপতি হওয়ার জন্য শুরু করেন তদবির ও ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ। এডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক এবং বাবুগঞ্জের ইউএনও'র উপরে অবৈধ চাপসৃষ্টির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় বিএনপির একটি গ্রুপের চাপে মিজানুর রহমানের নাম এক নম্বরে প্রস্তাব করে সভাপতি নিয়োগের জন্য ৩ জনের নাম শিক্ষাবোর্ডে পাঠায় চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে তাকে পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও যুবলীগ নেতা আখ্যা দিয়ে সভাপতি পদে নিযুক্ত না করার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও শিক্ষাবোর্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা। প্রমাণ হিসেবে যুবলীগ নেতাদের সাথে তার অন্তরঙ্গ মুহুর্তের বেশকিছু ছবিও অভিযোগের সাথে দাখিল করা হয়। সভাপতি প্রার্থী নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পরবর্তীকালে নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করে বরিশালের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এদিকে এ ঘটনায় বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা ডোনেশন দাবির অভিযোগ তুলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত করেন ক্ষুব্ধ সভাপতি প্রার্থী মিজানুর রহমান। কয়েকটি গণমাধ্যমে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশও করান তিনি। তবে মন্ত্রণালয় তদন্ত করে তার সেই অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি।
মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের এডহক কমিটি গঠন প্রক্রিয়া প্রায় ৭ মাস আটকে রাখা এবং জেলা প্রশাসককে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নাজেহাল করায় সর্বমহলে আলোচিত এক নাম হয়ে ওঠেন মিজানুর রহমান। সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি ধারণ না করলেও তাকে নিয়ে মানুষের কৌতুহল বাড়তে থাকে। ফলে মাধবপাশা এলাকায় তার ভক্ত-অনুসারীর সংখ্যাও বেড়ে যায়। এদিকে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েকদিন আগে তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের চিঠি পোস্ট করে লেখেন আলহামদুলিল্লাহ। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনের বলা হয়- বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং শিল্পায়ন কার্যক্রম জোরদারকরণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সুইডেনের এইচ অ্যান্ড এম কর্পোরেশন এবং স্পেনের ইন্ডিটেক্স গ্রুপের জারা সংস্থা ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা এলাকায় তাদের আঞ্চলিক শাখা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থান নির্বাচন, জমি অধিগ্রহণ, জনবল নিয়োগ ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য হেড অব হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট হিসেবে জনাব মিজানুর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করা হলো। এইচআর ডিপার্টমেন্টের প্রধান হিসেবে মিজানুর রহমানের নেতৃত্ব এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ও জনবল নিয়োগসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে। প্রজ্ঞাপনের চিঠিতে আরও বলা হয়- এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মাধবপাশা এলাকা একটি শিল্পাঞ্চলে রূপান্তরিত হবে। এতে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। একই সাথে মিজানুর রহমানকে তার এইচআর প্রধানের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের নির্দেশ এবং সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত ওই প্রজ্ঞাপনের চিঠি মিজানুর রহমানের ফেসবুক আইডিতে আপলোডের পরে শুরু হয় তোলপাড়। মাধবপাশা অঞ্চলে এমন এক ঐতিহাসিক শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা এবং তা বাস্তবায়নে প্রধান দায়িত্ব পাওয়া মিজানুর রহমান নেটিজেনদের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দনে ভাসতে থাকেন। মুহূর্তেই এই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায় এবং সেটা পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দৃষ্টিগোচর হয়। তবে সতর্কতা হিসেবে মন্ত্রণালয়ের ওই ভুয়া প্রজ্ঞাপনের চিঠিটা ফেসবুকে আপলোডের আগে সচিবের নামের অংশ, স্মারক নম্বর এবং তারিখের জায়গা লাল রং দিয়ে ঢেকে দেন তিনি।
বরিশাল অঞ্চলের পাট অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৮ আগস্ট সকালে পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় ফোন করে আমাকে এই প্রতারণার ঘটনাটি জানান এবং সরজমিনে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে উল্লেখিত পোস্টদাতা ব্যক্তির নাম-পরিচয় সনাক্ত করতে বলেন। আমি স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থল মাধবপাশা বাজারে গিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতারক ব্যক্তির নাম-পরিচয় নিশ্চিত করি। তিনি এই বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নাম ব্যবহার করে সম্পূর্ণ প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই ভুয়া প্রজ্ঞাপনটি সৃষ্টি করেন এবং সেটি তিনি নিজেই তার ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে নিশ্চিত হই। মিজানুর রহমান মাধবপাশা এলাকার স্থানীয় জনগণের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যেই সরকারি ওই ভুয়া প্রজ্ঞাপন সৃষ্টি করেন। তার এই জালিয়াতির অভিপ্রায় নিশ্চিত হওয়ার পরে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিকটস্থ এয়ারপোর্ট থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করি।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাবুগঞ্জের মাধবপাশা এলাকার স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, 'মিজানুর রহমান ভদ্রতার মুখোশ পরা এক ভয়ঙ্কর প্রতারক। তিনি আওয়ামী লীগের আমলে যুবলীগ নেতা হয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। তিনি মানুষের কাছে নিজেকে একজন ক্রীড়ামোদী ও সংগঠক হিসেবে পরিচয় দিলেও এর আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করাই ছিল তার মূল পেশা। তিনি একসময়ে বরিশালের সুরভী লঞ্চ কোম্পানিতে চাকরি করলেও সাংবাদিক পেটানোসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে সেখানে চাকরি হারান। এরপরে ৫ আগস্টের পরে তিনি স্থানীয় কিছু লোভী বিএনপি নেতাদের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সেজে মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি হওয়ার মিশন নিয়ে নামেন। মূলত সভাপতি হয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং নিয়োগবাণিজ্য করাই ছিল তার টার্গেট। তবে জেলা প্রশাসক মহোদয় তার দুরভিসন্ধি বুঝতে পারায় জুলাই মাসে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। নিরপেক্ষ একজন সরকারি কর্মকর্তাকে সভাপতি নিয়োগ করে চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এরপরেই তিনি আরও বড় ধরনের প্রতারণার মিশন নিয়ে মাধবপাশা এলাকায় শিল্পাঞ্চল প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। সেটা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য নিজে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি প্রজ্ঞাপন তৈরি করে নিজেই সেই প্রকল্পের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হন। তার এই সুপরিকল্পিত প্রতারণার ফাঁদ শুরুতেই ধরা না পড়লে শিল্পাঞ্চল প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ এবং জনবল নিয়োগের নামে সর্বস্বান্ত করা হতো মাধবপাশা এলাকার শতশত মানুষকে।'
এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন-উল-ইসলাম বলেন, 'সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫'এর ২১ থেকে ২৫ পর্যন্ত মোট ৫টি ধারায় অপরাধ সংঘটনের দায়ে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বরিশাল অঞ্চলের পাট অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক। রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার একমাত্র আসামি মিজানুর রহমানকে মাধবপাশা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ইন্সপেক্টর সনজীত চন্দ্র নাথ চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির তদন্ত করছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অন্যের পরিচয় ধারণ করে স্থানীয় লোকজনের সাথে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সরকারি প্রজ্ঞাপন সৃষ্টি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করার অপরাধ করেছেন বলে মামলার প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে।'
এদিকে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের সাথে থানা হাজতে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে পরবর্তীতে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে তার বক্তব্য দেবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান। #
যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সেই দলের নেতা বনে যান তিনি। ৫ আগস্টের আগে ছিলেন যুবলীগ নেতা। এরপরে বিএনপি'র ছত্রছায়ায় একটি হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তবে তাতে ব্যর্থ হয়ে নামেন নতুন মিশনে। সুইডেন এবং স্পেনের দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা এলাকায় শিল্পাঞ্চল তৈরি করছে বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। সেই শিল্পাঞ্চল নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ও জনবল নিয়োগসহ সকল কাজ সম্পন্ন করার জন্য এইচআর (হিউম্যান রিসোর্স) বিভাগের প্রধান হিসেবে তাকে নিয়োগ করেছে সরকার। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত এমন একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের চিঠি ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। এলাকায় শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা এবং এর দেখভালের সার্বিক দায়িত্ব পাওয়ায় তিনি নেটিজেনদের শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসতে থাকেন। তবে এতেই ঘটে যায় মূল বিপত্তি। একপর্যায়ে সেই পোস্ট ভাইরাল হয়ে পৌঁছে যায় পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। এভাবেই ফাঁস হয়ে যায় তার কল্পকাহিনী নির্ভর ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ পাতা গল্পটা। এরপরে পাট অধিদপ্তরের ডিজি'র নির্দেশে মামলা দায়ের করা হলে গ্রেপ্তার হন স্বঘোষিত সেই এইচআর ডিপার্টমেন্টের প্রধান মিজানুর রহমান। গতকাল রাতে তাকে ডিবি এবং এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামের জহুর সরদারের ছেলে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র এবং অনুসন্ধানে জানা যায়, একসময়ে বরিশালের সুরভী লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন মিজানুর রহমান। সেখানে সাংবাদিক পেটানোসহ নানান অভিযোগ আলোচিত-সমালোচিত হওয়ার পরে চাকরিচ্যুত হন তিনি। এরপরে গ্রামের বাড়ি মাধবপাশায় এসে তিনি বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করে নিজেকে একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিতি লাভে মনোযোগী হন। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজেও হয়ে যান স্বঘোষিত এক যুবলীগ নেতা। তবে দলীয় কোনো পদ-পদবি ছিল না তার। এদিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই পালিয়ে যান মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রণব কুমার বেপারী। প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে চলতি দায়িত্ব গ্রহণের পরে ম্যানেজিং কমিটি (এডহক) গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেখানে সভাপতি প্রার্থী হন স্থানীয় এই আলোচিত মিজানুর রহমান। বিএনপি'র স্থানীয় কতিপয় নেতাদের শেল্টার নিয়ে তিনি রাতারাতি হয়ে যান বিএনপি নেতা। সভাপতি হওয়ার জন্য শুরু করেন তদবির ও ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ। এডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক এবং বাবুগঞ্জের ইউএনও'র উপরে অবৈধ চাপসৃষ্টির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় বিএনপির একটি গ্রুপের চাপে মিজানুর রহমানের নাম এক নম্বরে প্রস্তাব করে সভাপতি নিয়োগের জন্য ৩ জনের নাম শিক্ষাবোর্ডে পাঠায় চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে তাকে পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও যুবলীগ নেতা আখ্যা দিয়ে সভাপতি পদে নিযুক্ত না করার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও শিক্ষাবোর্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা। প্রমাণ হিসেবে যুবলীগ নেতাদের সাথে তার অন্তরঙ্গ মুহুর্তের বেশকিছু ছবিও অভিযোগের সাথে দাখিল করা হয়। সভাপতি প্রার্থী নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পরবর্তীকালে নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করে বরিশালের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এদিকে এ ঘটনায় বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা ডোনেশন দাবির অভিযোগ তুলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত করেন ক্ষুব্ধ সভাপতি প্রার্থী মিজানুর রহমান। কয়েকটি গণমাধ্যমে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশও করান তিনি। তবে মন্ত্রণালয় তদন্ত করে তার সেই অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি।
মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের এডহক কমিটি গঠন প্রক্রিয়া প্রায় ৭ মাস আটকে রাখা এবং জেলা প্রশাসককে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নাজেহাল করায় সর্বমহলে আলোচিত এক নাম হয়ে ওঠেন মিজানুর রহমান। সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি ধারণ না করলেও তাকে নিয়ে মানুষের কৌতুহল বাড়তে থাকে। ফলে মাধবপাশা এলাকায় তার ভক্ত-অনুসারীর সংখ্যাও বেড়ে যায়। এদিকে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েকদিন আগে তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের চিঠি পোস্ট করে লেখেন আলহামদুলিল্লাহ। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনের বলা হয়- বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং শিল্পায়ন কার্যক্রম জোরদারকরণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সুইডেনের এইচ অ্যান্ড এম কর্পোরেশন এবং স্পেনের ইন্ডিটেক্স গ্রুপের জারা সংস্থা ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা এলাকায় তাদের আঞ্চলিক শাখা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থান নির্বাচন, জমি অধিগ্রহণ, জনবল নিয়োগ ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য হেড অব হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট হিসেবে জনাব মিজানুর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করা হলো। এইচআর ডিপার্টমেন্টের প্রধান হিসেবে মিজানুর রহমানের নেতৃত্ব এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ও জনবল নিয়োগসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে। প্রজ্ঞাপনের চিঠিতে আরও বলা হয়- এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মাধবপাশা এলাকা একটি শিল্পাঞ্চলে রূপান্তরিত হবে। এতে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। একই সাথে মিজানুর রহমানকে তার এইচআর প্রধানের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের নির্দেশ এবং সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত ওই প্রজ্ঞাপনের চিঠি মিজানুর রহমানের ফেসবুক আইডিতে আপলোডের পরে শুরু হয় তোলপাড়। মাধবপাশা অঞ্চলে এমন এক ঐতিহাসিক শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা এবং তা বাস্তবায়নে প্রধান দায়িত্ব পাওয়া মিজানুর রহমান নেটিজেনদের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দনে ভাসতে থাকেন। মুহূর্তেই এই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায় এবং সেটা পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দৃষ্টিগোচর হয়। তবে সতর্কতা হিসেবে মন্ত্রণালয়ের ওই ভুয়া প্রজ্ঞাপনের চিঠিটা ফেসবুকে আপলোডের আগে সচিবের নামের অংশ, স্মারক নম্বর এবং তারিখের জায়গা লাল রং দিয়ে ঢেকে দেন তিনি।
বরিশাল অঞ্চলের পাট অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৮ আগস্ট সকালে পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় ফোন করে আমাকে এই প্রতারণার ঘটনাটি জানান এবং সরজমিনে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে উল্লেখিত পোস্টদাতা ব্যক্তির নাম-পরিচয় সনাক্ত করতে বলেন। আমি স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থল মাধবপাশা বাজারে গিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতারক ব্যক্তির নাম-পরিচয় নিশ্চিত করি। তিনি এই বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নাম ব্যবহার করে সম্পূর্ণ প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই ভুয়া প্রজ্ঞাপনটি সৃষ্টি করেন এবং সেটি তিনি নিজেই তার ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে নিশ্চিত হই। মিজানুর রহমান মাধবপাশা এলাকার স্থানীয় জনগণের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যেই সরকারি ওই ভুয়া প্রজ্ঞাপন সৃষ্টি করেন। তার এই জালিয়াতির অভিপ্রায় নিশ্চিত হওয়ার পরে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিকটস্থ এয়ারপোর্ট থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করি।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাবুগঞ্জের মাধবপাশা এলাকার স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, 'মিজানুর রহমান ভদ্রতার মুখোশ পরা এক ভয়ঙ্কর প্রতারক। তিনি আওয়ামী লীগের আমলে যুবলীগ নেতা হয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। তিনি মানুষের কাছে নিজেকে একজন ক্রীড়ামোদী ও সংগঠক হিসেবে পরিচয় দিলেও এর আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করাই ছিল তার মূল পেশা। তিনি একসময়ে বরিশালের সুরভী লঞ্চ কোম্পানিতে চাকরি করলেও সাংবাদিক পেটানোসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে সেখানে চাকরি হারান। এরপরে ৫ আগস্টের পরে তিনি স্থানীয় কিছু লোভী বিএনপি নেতাদের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সেজে মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি হওয়ার মিশন নিয়ে নামেন। মূলত সভাপতি হয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং নিয়োগবাণিজ্য করাই ছিল তার টার্গেট। তবে জেলা প্রশাসক মহোদয় তার দুরভিসন্ধি বুঝতে পারায় জুলাই মাসে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। নিরপেক্ষ একজন সরকারি কর্মকর্তাকে সভাপতি নিয়োগ করে চন্দ্রদ্বীপ হাইস্কুল ও কলেজের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এরপরেই তিনি আরও বড় ধরনের প্রতারণার মিশন নিয়ে মাধবপাশা এলাকায় শিল্পাঞ্চল প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। সেটা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য নিজে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি প্রজ্ঞাপন তৈরি করে নিজেই সেই প্রকল্পের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হন। তার এই সুপরিকল্পিত প্রতারণার ফাঁদ শুরুতেই ধরা না পড়লে শিল্পাঞ্চল প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ এবং জনবল নিয়োগের নামে সর্বস্বান্ত করা হতো মাধবপাশা এলাকার শতশত মানুষকে।'
এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন-উল-ইসলাম বলেন, 'সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫'এর ২১ থেকে ২৫ পর্যন্ত মোট ৫টি ধারায় অপরাধ সংঘটনের দায়ে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বরিশাল অঞ্চলের পাট অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক। রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার একমাত্র আসামি মিজানুর রহমানকে মাধবপাশা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ইন্সপেক্টর সনজীত চন্দ্র নাথ চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির তদন্ত করছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অন্যের পরিচয় ধারণ করে স্থানীয় লোকজনের সাথে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সরকারি প্রজ্ঞাপন সৃষ্টি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করার অপরাধ করেছেন বলে মামলার প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে।'
এদিকে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের সাথে থানা হাজতে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে পরবর্তীতে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে তার বক্তব্য দেবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান। #

০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৬
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতোই রাজনীতি করে যাচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে এদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিহত না করলে আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখির পাশাপাশি দিনে দিনে ভোট কমে যাবে বিএনপির। আর এভাবে চলতে থাকলে ফ্যাসিস্টদের মতো তাদেরও পরিণতি হবে।’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বাবুগঞ্জে ব্রিজ উদ্বোধনকালে বিএনপির কিছু ব্যক্তি আমাকেসহ আমার এবি পার্টির নেতাকর্মীদের পুলিশ প্রশাসনের সামনে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি ছিল ফৌজদারি অপরাধ। যা পুলিশের সামনে ঘটায় তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারতো। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থেকে শুধু ২/৩ বার বাঁশি বাজিয়েছে। নির্বাচনের আগেই পুলিশের এমন ভূমিকা। পরে তাদের ভূমিকা কেমন হবে? যখন যে দল আসে পুলিশ তখন সেই দলের দালালি করে। এমনটা চলতে থাকলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার দুই দিন আগে মুলাদী উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন এলজিডির সচিব, জেলার ডিসিসহ জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। সে অনুষ্ঠানও পণ্ড করে দিয়েছে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ।’ বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করবে- তাই এই দলের নেতাকর্মীরা ছোট দলের সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাদের সহযোগিতা করবে এবং যারা হামলা নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ।
ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বরিশালের মীরগঞ্জ সেতু নির্মাণের জন্য যে চীনা কোম্পানি টেন্ডার পেয়েছে- তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে যোগাযোগের যে ভাষা ছিল তাতে চীনা কোম্পানি মোটেই সন্তুষ্ট হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তবে কোনও দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেননি।’
তিনি বলেন, ‘সেতু উদ্বোধন শেষে তাকে ঘুষি মারার চেষ্টা করা হয়েছে। হেনস্তা করা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে তার ক্যাম্পেইনে নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন কোনও সহযোগিতা করছে না।’ ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ফুয়াদ।
দেশে এখন ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ জানিয়ে ফুয়াদ বলেন, ‘এই প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে একটা ভালো নির্বাচন হবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য যার যেখানে যতটুকু দায়িত্ব আছে তার সেই দায়িত্ব পালন করা উচিত। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোটের পরিবেশ এনশিওর করা। এখনও অনেকে ভোটার হতে পারিনি।’ তাদের জন্য যাতে সময় বৃদ্ধি করা যায় তারও দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সেখানকার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। এরপর বাবুগঞ্জে ব্যারিস্টার ফুয়াদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদলের দাবি ছিল, বক্তৃতায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ ছাত্রদলকে চাঁদাবাজ বলেছেন।
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতোই রাজনীতি করে যাচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে এদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিহত না করলে আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখির পাশাপাশি দিনে দিনে ভোট কমে যাবে বিএনপির। আর এভাবে চলতে থাকলে ফ্যাসিস্টদের মতো তাদেরও পরিণতি হবে।’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বাবুগঞ্জে ব্রিজ উদ্বোধনকালে বিএনপির কিছু ব্যক্তি আমাকেসহ আমার এবি পার্টির নেতাকর্মীদের পুলিশ প্রশাসনের সামনে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি ছিল ফৌজদারি অপরাধ। যা পুলিশের সামনে ঘটায় তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারতো। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থেকে শুধু ২/৩ বার বাঁশি বাজিয়েছে। নির্বাচনের আগেই পুলিশের এমন ভূমিকা। পরে তাদের ভূমিকা কেমন হবে? যখন যে দল আসে পুলিশ তখন সেই দলের দালালি করে। এমনটা চলতে থাকলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার দুই দিন আগে মুলাদী উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন এলজিডির সচিব, জেলার ডিসিসহ জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। সে অনুষ্ঠানও পণ্ড করে দিয়েছে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ।’ বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করবে- তাই এই দলের নেতাকর্মীরা ছোট দলের সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাদের সহযোগিতা করবে এবং যারা হামলা নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ।
ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বরিশালের মীরগঞ্জ সেতু নির্মাণের জন্য যে চীনা কোম্পানি টেন্ডার পেয়েছে- তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে যোগাযোগের যে ভাষা ছিল তাতে চীনা কোম্পানি মোটেই সন্তুষ্ট হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তবে কোনও দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেননি।’
তিনি বলেন, ‘সেতু উদ্বোধন শেষে তাকে ঘুষি মারার চেষ্টা করা হয়েছে। হেনস্তা করা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে তার ক্যাম্পেইনে নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন কোনও সহযোগিতা করছে না।’ ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ফুয়াদ।
দেশে এখন ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ জানিয়ে ফুয়াদ বলেন, ‘এই প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে একটা ভালো নির্বাচন হবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য যার যেখানে যতটুকু দায়িত্ব আছে তার সেই দায়িত্ব পালন করা উচিত। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোটের পরিবেশ এনশিওর করা। এখনও অনেকে ভোটার হতে পারিনি।’ তাদের জন্য যাতে সময় বৃদ্ধি করা যায় তারও দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সেখানকার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। এরপর বাবুগঞ্জে ব্যারিস্টার ফুয়াদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদলের দাবি ছিল, বক্তৃতায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ ছাত্রদলকে চাঁদাবাজ বলেছেন।

০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:০১
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইয়ের সময় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে (৫৮) হত্যার ঘটনায় আসামি ইমরানকে (৩০) গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব-১। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় র্যাব-১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাকিব হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।
নিহত সিদ্দিকুর রহমান বরিশালের বাবুগঞ্জ থানাধীন মৃত ইসমাইল ফকিরের ছেলে। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রোড এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিদ্যুৎ বিভাগে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটারের স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান, আসামি ইমরান গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানাধীন কড্ডা (কালাকুর) এলাকার ইউনুস তালুকদারের ছেলে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে টঙ্গীর মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মাজার বস্তি থেকে আসামি ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। সে একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। গ্রেফতার ইমরান বর্তমানে র্যাব-১ এর হেফাজতে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইমরান স্বীকার করে সে মাদকসেবী। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মোবাইল ছিনতাই করে এবং বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে। ছিনতাই করা মোবাইলটি সে মাজার বস্তিতে ১০০০ টাকায় বিক্রি করে। গ্রেফতার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিদ্দিক কর্মস্থল কেরানীগঞ্জে যাওয়ার সময় টঙ্গীর বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুতে ওঠার সময় ছিনতাইকারী ইমরান ভিকটিম সিদ্দিকুর রহমানের পথরোধ করে। এ সময় ছিনতাইকারী তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয়। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারী ইমরানের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে সিদ্দিকের বাঁ হাতের উপরে তিনটি আঘাত করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলের নিচে সিঁড়ির কাছেই সিদ্দিকুর রহমানের মৃত্যু হয়।
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইয়ের সময় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে (৫৮) হত্যার ঘটনায় আসামি ইমরানকে (৩০) গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব-১। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় র্যাব-১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাকিব হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।
নিহত সিদ্দিকুর রহমান বরিশালের বাবুগঞ্জ থানাধীন মৃত ইসমাইল ফকিরের ছেলে। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রোড এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিদ্যুৎ বিভাগে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটারের স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান, আসামি ইমরান গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানাধীন কড্ডা (কালাকুর) এলাকার ইউনুস তালুকদারের ছেলে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে টঙ্গীর মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মাজার বস্তি থেকে আসামি ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। সে একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। গ্রেফতার ইমরান বর্তমানে র্যাব-১ এর হেফাজতে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইমরান স্বীকার করে সে মাদকসেবী। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মোবাইল ছিনতাই করে এবং বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে। ছিনতাই করা মোবাইলটি সে মাজার বস্তিতে ১০০০ টাকায় বিক্রি করে। গ্রেফতার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিদ্দিক কর্মস্থল কেরানীগঞ্জে যাওয়ার সময় টঙ্গীর বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুতে ওঠার সময় ছিনতাইকারী ইমরান ভিকটিম সিদ্দিকুর রহমানের পথরোধ করে। এ সময় ছিনতাইকারী তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয়। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারী ইমরানের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে সিদ্দিকের বাঁ হাতের উপরে তিনটি আঘাত করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলের নিচে সিঁড়ির কাছেই সিদ্দিকুর রহমানের মৃত্যু হয়।

০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে বরিশালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি সম্মিলিত মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) আয়োজিত এ মহড়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও বরিশাল এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এম খায়ের উদ্দীন, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। তিনি অংশগ্রহণকারী মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
জানা গেছে, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে ভূমিকম্পের পূর্ব ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে ২–৪ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী মোট ১২০ জনকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা, আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয় এবং উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্কুল–কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৩৭৫ জন মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীকে ২–৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং দলভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কার্যকর ও দ্রুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই ধরনের মহড়া ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশাল এলাকায় দুর্যোগ প্রস্তুতি আরও সুসংহত করতে সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে বরিশালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি সম্মিলিত মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) আয়োজিত এ মহড়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও বরিশাল এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এম খায়ের উদ্দীন, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। তিনি অংশগ্রহণকারী মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
জানা গেছে, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে ভূমিকম্পের পূর্ব ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে ২–৪ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী মোট ১২০ জনকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা, আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয় এবং উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্কুল–কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৩৭৫ জন মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীকে ২–৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং দলভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কার্যকর ও দ্রুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই ধরনের মহড়া ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশাল এলাকায় দুর্যোগ প্রস্তুতি আরও সুসংহত করতে সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৬
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:০১
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:১৩