
৩১ আগস্ট, ২০২৫ ১৮:০২
বরিশাল থেকে ঢাকা আসেন লঞ্চে এক কাপড়ে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। চলার মতো অর্থ ছিল না। ছিল না খাবার টাকা। শেখ সেলিমের ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকায় চাকরি নেন বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের। রাতে ঘুমাতেন বাংলার বাণী অফিসেই নিউজ প্রিন্ট বিছিয়ে। বাংলার বাণীতে যে বেতন পেতেন, তা দিয়েই চলতেন কোনো রকমে। বেতনও ঠিকঠাক মতো হতো না। অভাব-অনটনে কাটত জীবন। কাগজে কলমে আইনের ডিগ্রি থাকলেও কোনো দিন আইন পেশায় যুক্ত থাকেননি। কিন্তু গত ৫০ বছরে গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ। স্ত্রী ব্যাংকে চাকরি করতেন। সেই চাকরি পান রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবুকে ধরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি নেন। সেই টাকায় চলত সংসার। নিজের কোনো বৈধ উপার্জন ছিল না। কিন্তু রাজনীতিই তার কাছে ছিল দুর্নীতি এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের প্রধান উপায়। রাজনীতি করেই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। বর্তমানে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। লুটের টাকায় কাটাচ্ছেন বিলাসী জীবন। বৈধ কোনো উপার্জন ছাড়াই তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন ব্যাপকভাবে। দলের ভিতর কমিটি বাণিজ্য এবং মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন লাগামহীন। দুর্নীতির দাম কমিশনের প্রাথমিক হিসাব মতে, গত ১৫ বছরে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ গুণ। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন যে, এই হিসাবটি খুবই তুচ্ছ এবং হাস্যকর। বাস্তবে তার সম্পদের পরিমাণ আরও কয়েকশ গুণ বেশি। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী নানক ও তার স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকা। ২০২৪ সালের জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের সময় হলফনামায় নানক সম্পদের যে বৈধ হিসাব দিয়েছিলেন তার পরিমাণ ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকা। শুধু দেখানো হিসাবেই তার সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ। আওয়ামী লীগের এই নেতার কোনো বৈধ আয় নেই। তাহলে সম্পদ বাড়ল কীভাবে? একমাত্র উপায় রাজনীতি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথমে মন্ত্রী হতে পারেননি। কয়েক দিন পরে তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সৈয়দ আশরাফ মন্ত্রণালয়ে যেতেন না। মন্ত্রণালয়ের কাজেও তার মনোযোগ ছিল না। আর এই সুযোগ নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিভিন্ন টেন্ডার এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পর নানক আরও ক্ষমতা কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ হয়ে যান, হয়ে পড়েন বেপরোয়া। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তার সম্পৃক্ততা ছিল। সেটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের পর জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতিনির্ধারকে পরিণত হন। এরপর থেকেই তিনি একের পর এক সম্পদ গড়তে থাকেন। নিঃস্ব রিক্ত থেকে তিনি হয়ে যান হাজার কোটি টাকার মালিক। ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রথম বড় দুর্নীতি আসে ডেসটিনির ঘটনায়। ডেসটিনির কাছ থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কোনো সহায়তা করেননি নানক। ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ডেসটিনি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য নানককে প্রায় দুই শ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়েছিল। সেই সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পল্লী উন্নয়ন সচিব মিহির কান্তি মজুমদার যৌথভাবে এই টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডেসটিনি ছাড়াও এই সময় নানক এরকম আরও কয়েকটি কোঅপারেটিভ সোসাইটির কাছ থেকে বিপুল অর্থ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘যুবক’। ‘যুবক’ সমবায় সারা দেশে প্রচুর জমি-জমা এবং সম্পদ করেছিল। ঢাকা শহরেও তাদের বিপুল সম্পদ ছিল। যুবকের ধানমন্ডির জমিটি জাহাঙ্গীর কবির নানক দেন তার ঘনিষ্ঠ সহচর মির্জা আজমকে। নামমাত্র মূল্যে ধানমন্ডির এক বিঘা জমি মির্জা আজম গ্রহণ করেন। যেখানে তিনি এখন বহুতল ভবন করেছেন এবং একটি ফ্ল্যাটে নিজে থাকতেন। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, বসিলা, কেরানীগঞ্জে যুবকের বিভিন্ন সম্পদ দখল করে নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। যুবকের লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়া হবে, যুবককে নতুন করে কাজ করতে দেওয়া হবে- এরকম আশ্বাস দিয়েও নানক বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানকের আরেকটা টার্গেট ছিল আর্থ ফাউন্ডেশন। আর্থ ফাউন্ডেশনেও কোঅপারেটিভ সোসাইটি ছিল, যারা জনগণকে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা গ্রহণ করত। আর্থ ফাউন্ডেশনের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যাদের কাছ থেকে তিনি অর্থ নিয়েছেন, তাদেরকেই তিনি ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। কারও কোনো উপকার করেননি। এটি ছিল নানকের অভিনব একটি কৌশল। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ নামে সেই প্রকল্পটির দিকে নজর দেন। শেখ হাসিনার অন্যতম প্রিয় এই প্রকল্প ছিল, যেখানে গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তাদেরকে একখণ্ড জমি এবং সেই জমির ওপর বাড়ি এবং একটি খামার করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই পুরো টাকাই লুটপাট করা হয়। ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে’র নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পাঁচ বছরের মন্ত্রিত্বকালের সময় সেখানে মোট ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অথচ কোনো গরু বা বাড়িঘর দেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুরো টাকাই প্রায় লুটপাট হয়ে গেছে। এ সময় ‘একটি বাড়ি একটি খামারে’র নাম হয় ‘অর্ধেক তোমার, অর্ধেক আমার’।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রশান্ত কুমার হালদার নামে একজন প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আরও কতিপয় ব্যক্তি মিলে এই প্রকল্প লুণ্ঠন করেন। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় মিল্কভিটা সমবায় সমিতি ছিল জাহাঙ্গীর কবির নানকের অর্থ উপার্জনের একটি অন্যতম জায়গা। মিল্কভিটাতে হস্তক্ষেপ করে, মিল্কভিটার বিভিন্ন বিষয় তদারকি করে বানিয়ে ফেলেন বিপুল পরিমাণ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অন্যতম বিভাগ স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় প্রচুর। জাহাঙ্গীর কবির নানক এখানে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি কে প্রধান প্রকৌশলী হবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে কারা প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তদারকি শুরু করেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
২০০৯ থেকে ২০১৫ সালে নানকের অন্যতম বড় কেলেঙ্কারি ছিল যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার প্রকল্প। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্প দুর্নীতিপূর্ণ এবং অযৌক্তিক হিসেবে ফাইল আটকে দেন। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্পকে অনুমতি না দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ নোট লিখেছিলেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এই প্রকল্পটি যেন পাস হয় সেজন্য শেখ হাসিনার কাছে যান এবং তার সঙ্গে এক দিন দেনদরবার করেন। জানা যায়, এই প্রকল্প পাস করানোর জন্য নানককে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার বিনিময়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হাসিনাকে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে সৈয়দ আশরাফকে ডেকে নিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এই ফ্লাইওভারের ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশের একটি বড় দুর্নীতির ঘটনা। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার এখন একটি বিষফোঁড়া হিসেবে জাতির সামনে এসেছে। নানকের এসব দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মন্ত্রণালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার কথা সবাই জানত। এ কারণেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জাহাঙ্গীর কবির নানককে মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়নি। কিন্তু মন্ত্রী না হলে কী হবে? জাহাঙ্গীর কবির নানক তার দুর্নীতি এবং লুটপাট অব্যাহত রাখেন। হিসাব করে দেখা গেছে যে, পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর কবির নানক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যে টাকা দিয়ে তিনি বেনামে দেশেবিদেশে সম্পদ করেছেন। এসব অধিকাংশ সম্পদের হিসাব তিনি গোপন করেছেন। তার ব্যক্তি চাকর-বাকর, দেহরক্ষীর নামে ফ্ল্যাট, জমি কিনে তিনি নিজেকে নিরাপদে রেখেছেন। এভাবেই আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রথম পাঁচ বছরেই নানক হয়ে যান অন্যতম ধনী। যিনি এক সময় দুবেলা খেতে পারতেন না, তিনি পাঁচ বছরের মধ্যেই হয়ে ওঠেন এক ধনাঢ্য হাজার কোটি টাকার মালিক।
সংবাদসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বরিশাল থেকে ঢাকা আসেন লঞ্চে এক কাপড়ে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। চলার মতো অর্থ ছিল না। ছিল না খাবার টাকা। শেখ সেলিমের ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকায় চাকরি নেন বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের। রাতে ঘুমাতেন বাংলার বাণী অফিসেই নিউজ প্রিন্ট বিছিয়ে। বাংলার বাণীতে যে বেতন পেতেন, তা দিয়েই চলতেন কোনো রকমে। বেতনও ঠিকঠাক মতো হতো না। অভাব-অনটনে কাটত জীবন। কাগজে কলমে আইনের ডিগ্রি থাকলেও কোনো দিন আইন পেশায় যুক্ত থাকেননি। কিন্তু গত ৫০ বছরে গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ। স্ত্রী ব্যাংকে চাকরি করতেন। সেই চাকরি পান রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবুকে ধরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি নেন। সেই টাকায় চলত সংসার। নিজের কোনো বৈধ উপার্জন ছিল না। কিন্তু রাজনীতিই তার কাছে ছিল দুর্নীতি এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের প্রধান উপায়। রাজনীতি করেই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। বর্তমানে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। লুটের টাকায় কাটাচ্ছেন বিলাসী জীবন। বৈধ কোনো উপার্জন ছাড়াই তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন ব্যাপকভাবে। দলের ভিতর কমিটি বাণিজ্য এবং মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন লাগামহীন। দুর্নীতির দাম কমিশনের প্রাথমিক হিসাব মতে, গত ১৫ বছরে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ গুণ। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন যে, এই হিসাবটি খুবই তুচ্ছ এবং হাস্যকর। বাস্তবে তার সম্পদের পরিমাণ আরও কয়েকশ গুণ বেশি। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী নানক ও তার স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকা। ২০২৪ সালের জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের সময় হলফনামায় নানক সম্পদের যে বৈধ হিসাব দিয়েছিলেন তার পরিমাণ ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকা। শুধু দেখানো হিসাবেই তার সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ। আওয়ামী লীগের এই নেতার কোনো বৈধ আয় নেই। তাহলে সম্পদ বাড়ল কীভাবে? একমাত্র উপায় রাজনীতি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথমে মন্ত্রী হতে পারেননি। কয়েক দিন পরে তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সৈয়দ আশরাফ মন্ত্রণালয়ে যেতেন না। মন্ত্রণালয়ের কাজেও তার মনোযোগ ছিল না। আর এই সুযোগ নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিভিন্ন টেন্ডার এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পর নানক আরও ক্ষমতা কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ হয়ে যান, হয়ে পড়েন বেপরোয়া। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তার সম্পৃক্ততা ছিল। সেটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের পর জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতিনির্ধারকে পরিণত হন। এরপর থেকেই তিনি একের পর এক সম্পদ গড়তে থাকেন। নিঃস্ব রিক্ত থেকে তিনি হয়ে যান হাজার কোটি টাকার মালিক। ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রথম বড় দুর্নীতি আসে ডেসটিনির ঘটনায়। ডেসটিনির কাছ থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কোনো সহায়তা করেননি নানক। ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ডেসটিনি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য নানককে প্রায় দুই শ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়েছিল। সেই সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পল্লী উন্নয়ন সচিব মিহির কান্তি মজুমদার যৌথভাবে এই টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডেসটিনি ছাড়াও এই সময় নানক এরকম আরও কয়েকটি কোঅপারেটিভ সোসাইটির কাছ থেকে বিপুল অর্থ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘যুবক’। ‘যুবক’ সমবায় সারা দেশে প্রচুর জমি-জমা এবং সম্পদ করেছিল। ঢাকা শহরেও তাদের বিপুল সম্পদ ছিল। যুবকের ধানমন্ডির জমিটি জাহাঙ্গীর কবির নানক দেন তার ঘনিষ্ঠ সহচর মির্জা আজমকে। নামমাত্র মূল্যে ধানমন্ডির এক বিঘা জমি মির্জা আজম গ্রহণ করেন। যেখানে তিনি এখন বহুতল ভবন করেছেন এবং একটি ফ্ল্যাটে নিজে থাকতেন। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, বসিলা, কেরানীগঞ্জে যুবকের বিভিন্ন সম্পদ দখল করে নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। যুবকের লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়া হবে, যুবককে নতুন করে কাজ করতে দেওয়া হবে- এরকম আশ্বাস দিয়েও নানক বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানকের আরেকটা টার্গেট ছিল আর্থ ফাউন্ডেশন। আর্থ ফাউন্ডেশনেও কোঅপারেটিভ সোসাইটি ছিল, যারা জনগণকে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা গ্রহণ করত। আর্থ ফাউন্ডেশনের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যাদের কাছ থেকে তিনি অর্থ নিয়েছেন, তাদেরকেই তিনি ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। কারও কোনো উপকার করেননি। এটি ছিল নানকের অভিনব একটি কৌশল। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ নামে সেই প্রকল্পটির দিকে নজর দেন। শেখ হাসিনার অন্যতম প্রিয় এই প্রকল্প ছিল, যেখানে গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তাদেরকে একখণ্ড জমি এবং সেই জমির ওপর বাড়ি এবং একটি খামার করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই পুরো টাকাই লুটপাট করা হয়। ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে’র নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পাঁচ বছরের মন্ত্রিত্বকালের সময় সেখানে মোট ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অথচ কোনো গরু বা বাড়িঘর দেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুরো টাকাই প্রায় লুটপাট হয়ে গেছে। এ সময় ‘একটি বাড়ি একটি খামারে’র নাম হয় ‘অর্ধেক তোমার, অর্ধেক আমার’।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রশান্ত কুমার হালদার নামে একজন প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আরও কতিপয় ব্যক্তি মিলে এই প্রকল্প লুণ্ঠন করেন। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় মিল্কভিটা সমবায় সমিতি ছিল জাহাঙ্গীর কবির নানকের অর্থ উপার্জনের একটি অন্যতম জায়গা। মিল্কভিটাতে হস্তক্ষেপ করে, মিল্কভিটার বিভিন্ন বিষয় তদারকি করে বানিয়ে ফেলেন বিপুল পরিমাণ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অন্যতম বিভাগ স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় প্রচুর। জাহাঙ্গীর কবির নানক এখানে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি কে প্রধান প্রকৌশলী হবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে কারা প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তদারকি শুরু করেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
২০০৯ থেকে ২০১৫ সালে নানকের অন্যতম বড় কেলেঙ্কারি ছিল যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার প্রকল্প। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্প দুর্নীতিপূর্ণ এবং অযৌক্তিক হিসেবে ফাইল আটকে দেন। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্পকে অনুমতি না দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ নোট লিখেছিলেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এই প্রকল্পটি যেন পাস হয় সেজন্য শেখ হাসিনার কাছে যান এবং তার সঙ্গে এক দিন দেনদরবার করেন। জানা যায়, এই প্রকল্প পাস করানোর জন্য নানককে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার বিনিময়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হাসিনাকে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে সৈয়দ আশরাফকে ডেকে নিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এই ফ্লাইওভারের ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশের একটি বড় দুর্নীতির ঘটনা। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার এখন একটি বিষফোঁড়া হিসেবে জাতির সামনে এসেছে। নানকের এসব দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মন্ত্রণালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার কথা সবাই জানত। এ কারণেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জাহাঙ্গীর কবির নানককে মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়নি। কিন্তু মন্ত্রী না হলে কী হবে? জাহাঙ্গীর কবির নানক তার দুর্নীতি এবং লুটপাট অব্যাহত রাখেন। হিসাব করে দেখা গেছে যে, পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর কবির নানক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যে টাকা দিয়ে তিনি বেনামে দেশেবিদেশে সম্পদ করেছেন। এসব অধিকাংশ সম্পদের হিসাব তিনি গোপন করেছেন। তার ব্যক্তি চাকর-বাকর, দেহরক্ষীর নামে ফ্ল্যাট, জমি কিনে তিনি নিজেকে নিরাপদে রেখেছেন। এভাবেই আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রথম পাঁচ বছরেই নানক হয়ে যান অন্যতম ধনী। যিনি এক সময় দুবেলা খেতে পারতেন না, তিনি পাঁচ বছরের মধ্যেই হয়ে ওঠেন এক ধনাঢ্য হাজার কোটি টাকার মালিক।
সংবাদসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৬
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:০১
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:১৩

০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৬
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতোই রাজনীতি করে যাচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে এদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিহত না করলে আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখির পাশাপাশি দিনে দিনে ভোট কমে যাবে বিএনপির। আর এভাবে চলতে থাকলে ফ্যাসিস্টদের মতো তাদেরও পরিণতি হবে।’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বাবুগঞ্জে ব্রিজ উদ্বোধনকালে বিএনপির কিছু ব্যক্তি আমাকেসহ আমার এবি পার্টির নেতাকর্মীদের পুলিশ প্রশাসনের সামনে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি ছিল ফৌজদারি অপরাধ। যা পুলিশের সামনে ঘটায় তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারতো। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থেকে শুধু ২/৩ বার বাঁশি বাজিয়েছে। নির্বাচনের আগেই পুলিশের এমন ভূমিকা। পরে তাদের ভূমিকা কেমন হবে? যখন যে দল আসে পুলিশ তখন সেই দলের দালালি করে। এমনটা চলতে থাকলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার দুই দিন আগে মুলাদী উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন এলজিডির সচিব, জেলার ডিসিসহ জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। সে অনুষ্ঠানও পণ্ড করে দিয়েছে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ।’ বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করবে- তাই এই দলের নেতাকর্মীরা ছোট দলের সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাদের সহযোগিতা করবে এবং যারা হামলা নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ।
ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বরিশালের মীরগঞ্জ সেতু নির্মাণের জন্য যে চীনা কোম্পানি টেন্ডার পেয়েছে- তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে যোগাযোগের যে ভাষা ছিল তাতে চীনা কোম্পানি মোটেই সন্তুষ্ট হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তবে কোনও দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেননি।’
তিনি বলেন, ‘সেতু উদ্বোধন শেষে তাকে ঘুষি মারার চেষ্টা করা হয়েছে। হেনস্তা করা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে তার ক্যাম্পেইনে নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন কোনও সহযোগিতা করছে না।’ ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ফুয়াদ।
দেশে এখন ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ জানিয়ে ফুয়াদ বলেন, ‘এই প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে একটা ভালো নির্বাচন হবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য যার যেখানে যতটুকু দায়িত্ব আছে তার সেই দায়িত্ব পালন করা উচিত। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোটের পরিবেশ এনশিওর করা। এখনও অনেকে ভোটার হতে পারিনি।’ তাদের জন্য যাতে সময় বৃদ্ধি করা যায় তারও দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সেখানকার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। এরপর বাবুগঞ্জে ব্যারিস্টার ফুয়াদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদলের দাবি ছিল, বক্তৃতায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ ছাত্রদলকে চাঁদাবাজ বলেছেন।
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতোই রাজনীতি করে যাচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে এদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিহত না করলে আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখির পাশাপাশি দিনে দিনে ভোট কমে যাবে বিএনপির। আর এভাবে চলতে থাকলে ফ্যাসিস্টদের মতো তাদেরও পরিণতি হবে।’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বাবুগঞ্জে ব্রিজ উদ্বোধনকালে বিএনপির কিছু ব্যক্তি আমাকেসহ আমার এবি পার্টির নেতাকর্মীদের পুলিশ প্রশাসনের সামনে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি ছিল ফৌজদারি অপরাধ। যা পুলিশের সামনে ঘটায় তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারতো। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থেকে শুধু ২/৩ বার বাঁশি বাজিয়েছে। নির্বাচনের আগেই পুলিশের এমন ভূমিকা। পরে তাদের ভূমিকা কেমন হবে? যখন যে দল আসে পুলিশ তখন সেই দলের দালালি করে। এমনটা চলতে থাকলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার দুই দিন আগে মুলাদী উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন এলজিডির সচিব, জেলার ডিসিসহ জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। সে অনুষ্ঠানও পণ্ড করে দিয়েছে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে ছোট একটি অংশ।’ বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করবে- তাই এই দলের নেতাকর্মীরা ছোট দলের সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাদের সহযোগিতা করবে এবং যারা হামলা নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ।
ফুয়াদ আরও বলেন, ‘বরিশালের মীরগঞ্জ সেতু নির্মাণের জন্য যে চীনা কোম্পানি টেন্ডার পেয়েছে- তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে যোগাযোগের যে ভাষা ছিল তাতে চীনা কোম্পানি মোটেই সন্তুষ্ট হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তবে কোনও দল বা ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেননি।’
তিনি বলেন, ‘সেতু উদ্বোধন শেষে তাকে ঘুষি মারার চেষ্টা করা হয়েছে। হেনস্তা করা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে তার ক্যাম্পেইনে নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন কোনও সহযোগিতা করছে না।’ ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ফুয়াদ।
দেশে এখন ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’ জানিয়ে ফুয়াদ বলেন, ‘এই প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে একটা ভালো নির্বাচন হবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য যার যেখানে যতটুকু দায়িত্ব আছে তার সেই দায়িত্ব পালন করা উচিত। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভোটের পরিবেশ এনশিওর করা। এখনও অনেকে ভোটার হতে পারিনি।’ তাদের জন্য যাতে সময় বৃদ্ধি করা যায় তারও দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সেখানকার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। এরপর বাবুগঞ্জে ব্যারিস্টার ফুয়াদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদলের দাবি ছিল, বক্তৃতায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ ছাত্রদলকে চাঁদাবাজ বলেছেন।

০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:০১
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইয়ের সময় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে (৫৮) হত্যার ঘটনায় আসামি ইমরানকে (৩০) গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব-১। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় র্যাব-১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাকিব হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।
নিহত সিদ্দিকুর রহমান বরিশালের বাবুগঞ্জ থানাধীন মৃত ইসমাইল ফকিরের ছেলে। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রোড এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিদ্যুৎ বিভাগে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটারের স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান, আসামি ইমরান গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানাধীন কড্ডা (কালাকুর) এলাকার ইউনুস তালুকদারের ছেলে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে টঙ্গীর মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মাজার বস্তি থেকে আসামি ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। সে একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। গ্রেফতার ইমরান বর্তমানে র্যাব-১ এর হেফাজতে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইমরান স্বীকার করে সে মাদকসেবী। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মোবাইল ছিনতাই করে এবং বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে। ছিনতাই করা মোবাইলটি সে মাজার বস্তিতে ১০০০ টাকায় বিক্রি করে। গ্রেফতার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিদ্দিক কর্মস্থল কেরানীগঞ্জে যাওয়ার সময় টঙ্গীর বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুতে ওঠার সময় ছিনতাইকারী ইমরান ভিকটিম সিদ্দিকুর রহমানের পথরোধ করে। এ সময় ছিনতাইকারী তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয়। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারী ইমরানের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে সিদ্দিকের বাঁ হাতের উপরে তিনটি আঘাত করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলের নিচে সিঁড়ির কাছেই সিদ্দিকুর রহমানের মৃত্যু হয়।
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইয়ের সময় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে (৫৮) হত্যার ঘটনায় আসামি ইমরানকে (৩০) গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব-১। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় র্যাব-১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাকিব হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।
নিহত সিদ্দিকুর রহমান বরিশালের বাবুগঞ্জ থানাধীন মৃত ইসমাইল ফকিরের ছেলে। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রোড এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিদ্যুৎ বিভাগে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটারের স্টোর কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান, আসামি ইমরান গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানাধীন কড্ডা (কালাকুর) এলাকার ইউনুস তালুকদারের ছেলে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে টঙ্গীর মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত মাজার বস্তি থেকে আসামি ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। সে একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। গ্রেফতার ইমরান বর্তমানে র্যাব-১ এর হেফাজতে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইমরান স্বীকার করে সে মাদকসেবী। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মোবাইল ছিনতাই করে এবং বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে। ছিনতাই করা মোবাইলটি সে মাজার বস্তিতে ১০০০ টাকায় বিক্রি করে। গ্রেফতার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিদ্দিক কর্মস্থল কেরানীগঞ্জে যাওয়ার সময় টঙ্গীর বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুতে ওঠার সময় ছিনতাইকারী ইমরান ভিকটিম সিদ্দিকুর রহমানের পথরোধ করে। এ সময় ছিনতাইকারী তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয়। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারী ইমরানের সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে সিদ্দিকের বাঁ হাতের উপরে তিনটি আঘাত করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলের নিচে সিঁড়ির কাছেই সিদ্দিকুর রহমানের মৃত্যু হয়।

০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে বরিশালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি সম্মিলিত মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) আয়োজিত এ মহড়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও বরিশাল এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এম খায়ের উদ্দীন, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। তিনি অংশগ্রহণকারী মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
জানা গেছে, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে ভূমিকম্পের পূর্ব ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে ২–৪ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী মোট ১২০ জনকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা, আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয় এবং উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্কুল–কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৩৭৫ জন মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীকে ২–৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং দলভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কার্যকর ও দ্রুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই ধরনের মহড়া ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশাল এলাকায় দুর্যোগ প্রস্তুতি আরও সুসংহত করতে সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে বরিশালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি সম্মিলিত মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) আয়োজিত এ মহড়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও বরিশাল এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এম খায়ের উদ্দীন, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। তিনি অংশগ্রহণকারী মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
জানা গেছে, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে ভূমিকম্পের পূর্ব ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে ২–৪ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী মোট ১২০ জনকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা, আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয় এবং উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্কুল–কলেজ থেকে অংশ নেওয়া ৩৭৫ জন মাঠ কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্র–ছাত্রীকে ২–৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং দলভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে কার্যকর ও দ্রুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই ধরনের মহড়া ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশাল এলাকায় দুর্যোগ প্রস্তুতি আরও সুসংহত করতে সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.